রূপগঞ্জ বার্তা ডেস্কঃ আশি বছরের বৃদ্ধ গিয়াসউদ্দিন। বয়সভারে মাঝে মাঝে স্মৃতিভ্রম ঘটে। তবে নামাজ কালাম ও সাংসারিক কাজকর্ম করেন স্বাভাবিক ভাবেই। কিন্তু গত (১৬ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার সকালে ঘর থেকে স্থানীয় বাজারে বেরিয়ে আর ফেরেননি ঘরে। পরিবার ও গ্রামবাসি খোঁজাখুঁজি করে পাননি সন্ধান।
পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করার ২৪ ঘটার মধ্যে খোঁজ পায় ওই বৃদ্ধের। শুধু তাই নয়, ওই পোস্টকারী সাংবাদিক ও নিঁখোজের পরিবার মিলে ১৭ তারিখ রাতে সুস্থাবস্থায় উদ্ধার করেন। ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মধুখালীতে। বৃদ্ধ গিয়াসউদ্দিনের নাতনী জামাতা রবিউল ইসলাম জানান, গত (১৬ ডিসেম্বর) সকালে তার নানা শশুর স্থানীয় ভক্তবাড়ি বাজারে চা পান করতে যান।
পরে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে এলেও বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকজন বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সন্ধ্যার পর নিজ গ্রাম ও আশপাশের মসজিদে মাইকিং এমনকি একাধিক অটো নিয়ে ঘুরে ঘুরে সন্ধান পেতে মাইকিং করা হয়। কিন্তু কোন প্রকার খোঁজ পাওয়া যায়নি। একই রাতে বিষয়টি জেনে মধুখালী গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক মাহবুব আলম প্রিয় তার নিজ ফেসবুক আইডিতে নিঁখোজ সংবাদ হিসেবে নানা গিয়াসউদ্দিনের ছবি দিয়ে পোস্ট করেন।
পরেরদিন বিকালে ওই ফেসবুকের পোস্ট দেখে নারায়ণগঞ্জের বন্দরের জামগর আনন্দনগর এলাকা থেকে জুবায়ের নামের এক যুবক গিয়াসউদ্দিনের সন্ধান দেন। স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুব আলম প্রিয় বলেন, মানবিক বিবেচনায় হারিয়ে যাওয়া বৃদ্ধ গিয়াসউদ্দিনের খোঁজ পেতে ফেসবুকে পোস্ট করি৷ ১৭ ডিসেম্বর বিকালে জুবায়ের হোসাইন নামের অপর ফেসবুক ব্যবহারকারী আমাকে গিয়াসউদ্দিনের অবস্থান জানায়।
পরে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে রাত ১২ টার দিকে বন্দরের জামগর ইউনিয়নের আনন্দ নগর গ্রামের আলম মিয়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার করি। আনন্দ নগরের বাসিন্দা আশ্রয়দাতা আলম মিয়া বলেন, ১৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে আমার পিতার চায়ের দোকানের সামনে ওই বৃদ্ধ পা ব্যথা নিয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছিলেন। সঙ্গে শীতের পোষাক ছিলো না। সে তার ঠিকানা নিজ উপজেলা রূপগঞ্জ বলতে পারলেও গ্রামের নাম বলতে পারেনি। তাই ফেসবুকে লাইভ করি।
ওই লাইভে সাংবাদিক মাহবুব নামীয় এক ব্যক্তি কমেন্ট করে ওনার পরিচয় নিশ্চিত করেন। এতোক্ষণ তাকে আমাদের ঘরে রেখে সেবাযত্ন করেছি। এদিকে গিয়াসউদ্দিনকে (১৭ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গিয়াসউদ্দিন বলেন, আমি রূপগঞ্জেই যোহরের নামাজ পড়েছি। পরে কিভাবে বন্দর চলে গেছি মনে নাই।
১৬ তারিখ রাতে কোথায় থেকেছি তাও মনে নাই। তবে শুধু হেটেছি, তাই পা ব্যথা বেড়েছে। পরিবারের লোকজনের দাবী,গিয়াসউদ্দিনকে কোন অজ্ঞান পার্টি টাকা পাবে মনে করে ধরে নিয়ে যায়। পরে টাকা না পেয়ে কিংবা বয়স্ক ভেবে বন্দরে ফেলে গেছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি বা অভিযোগ করেননি ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।